ঈদের নামায পড়ার সঠিক নিয়ম – Eid er Namaz Porar Niom | ঈদুল ফিতর এর নামাজ
ঈদ মোবারক! ঈদ হলো মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য একটি খুশির দিন। ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে এই দিন সকল শ্রেণির মুসলমানগণ তাদের সর্বোচ্চ টা দিয়ে পরিবারের জন্য খুশির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এই দিন আত্মীয়-স্বজন, সব বয়সের বন্ধু-বান্ধব, অফিস কলিগ, ও ব্যক্তিজীবনে শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাদের পরস্পর কৌশল বিনিময় করে।
ক্যাম্পাস প্রতিদিন এর সকল পাঠক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের আয়োজন। আজকে আমরা আমাদের আয়োজনে ঈদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করবো।
Table of Contents
ঈদের নামায পড়ার সঠিক নিয়ম
মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ। বছরে দু’টি ঈদ উদযাপন করে মুমিন মুসলমানগন। ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। ঈদের নামাজ বছরে দুবার পড়ার কারণে অনেকেই নামাজ পড়ার নিয়ম ভুলে যান। সে কারণেই মুমিন মুসলমানের জন্য ঈদের নামাজের নিয়ম জেনে নেয়া জরুরি।
জেনে নিন: কিভাবে পড়বেন ঈদের নামায ?
ঈদের নামাজ মূলত উন্মুক্ত স্থানে আদায় করা উচিৎ। কারন উন্মুক্ত স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করা সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খোলা জায়গায় ঈদের নামাজ আদায় করতেন। তবেঁ যদি উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা না থাকে, কিংবা কোন সমস্যা ” ঝড় , বৃষ্টি , প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি ” হয় তবে মসজিদেও ঈদের নামাজ পড়া যাবে।
ঈদের নামাজের নিয়ত
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে:
نَوَيْتُ أنْ أصَلِّي للهِ تَعَالىَ رَكْعَتَيْنِ صَلَاةِ الْعِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتِّ التَكْبِيْرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اِقْتَضَيْتُ بِهَذَا الْاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اللهُ اَكْبَرْ
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকাআতাইন সালাতিল ইদিল ফিতরি মাআ সিত্তাতিত তাকবিরাতি ওয়াঝিবুল্লাহি তাআলা ইকতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াঝঝিহান ইলা ঝিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি ‘আল্লাহু আকবার।
অর্থ : আমি ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি- ‘আল্লাহু আকবার’।
ঈদুল আজহা নামাজের নিয়ত আরবিতে:
نويت ان اصلي لله تعالي ركعتي صلاة العيد الاضحى مع ستة تكبيرات واجب الله تعالى اقتديت بهذا الامام متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা আলা রাকয়াতাই ছালাতি ঈদিল আযহা মাআ ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা আলা ইক্বতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
ঈদের নামায পড়ার সঠিক নিয়ম
ঈদের নামাজ মূলত উন্মুক্ত স্থানে আদায় করা উচিৎ। কারন উন্মুক্ত স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করা সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খোলা জায়গায় ঈদের নামাজ আদায় করতেন। তবেঁ যদি উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা না থাকে, কিংবা কোন সমস্যা ” ঝড় , বৃষ্টি , প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি ” হয় তবে মসজিদেও ঈদের নামাজ পড়া যাবে।
উল্লেখ্য: অবশ্যই ঈদের নামাজ তা জামাআতের সঙ্গে পড়তে হবে। জুমআ নামাজ এর জন্য যে শর্ত প্রযোজ্য, ঈদের নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রেও সে একই শর্ত প্রযোজ্য। সেই সাথে প্রয়োজন খুতবা দেয়া। ঈদের নামাজের জন্য কোনো আজান ও ইকামত নেই।
নিয়ম-১: প্রথম রাকাআতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পড়া।
প্রথম রাকাত: – তাকবিরে তাহরিমা বলে হাত বেঁধে (ছেড়ে না দিয়ে) ছানা পড়বে।
“ছানা পড়া : ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।”
নিয়ম-২: এরপর দু’হাত কান পর্যন্ত তুলে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত ছেড়ে দেবে।
নিয়ম-৩: তারপর আবার দু’হাত কান পর্যন্ত তুলে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত ছেড়ে দেবে।
নিয়ম-৪: তারপর তৃতীয়বার দু’হাত কান পর্যন্ত তুলে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেঁধে নেবে।
তারপর ইমাম সাহেব ‘আউযুবিল্লাহ’ ‘বিসমিল্লাহ’ ‘সূরা ফাতিহা’ ও অন্য একটি সূরা পড়ে রুকু করবেন।
দ্বিতীয় রাকাআতঃ
নিয়ম-৫: দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে বিসমিল্লাহসহ ইমাম সাহেব কিরাত পড়বেন “আলহামদু ও অন্য একটি সুরা পড়বে ।
মূলত – বিসমিল্লাহ পড়া
– সুরা ফাতেহা পড়া
– সুরা মিলানো।
নিয়ম-৬: সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেয়া।
নিয়ম-৭: অতিরিক্ত এই ৩ বার তাকবির এর সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত ছেড়ে দেবেন।নিয়ম-৮: তারপর হাত না উঠিয়ে চতুর্থ তাকবির বলে রুকুতে যাবেন (ঈদের নামাযে রুকুর এই তাকবির ওয়াজিব)
নিয়ম-৯: এরপর সেজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।
খুতবা
ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবে। ইমাম সাহেব সরাসরি মিম্বারে না বসে দাঁড়িয়ে খুতবা পাঠ শুরু করবেন।
পরপর দুই খুতবা পাঠ করবেন এবং মাঝখানে তিন আয়াত পড়া যায় এতটুকু সময় পরিমান বসবেন, এই বসা সুন্নাত। [ সুত্র=> দুররে মুখতার ১/৭৭৯ পৃষ্ঠা ]
ঈদের নামাজের মুসলমান সকল পেশার মানুষ এক কাতারে নামাজ আদায় করে। নামাজ শেষে তারা পরস্পর কৌশল বিনিময় করে। এসময় এক আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি করে। মুসলমানদের এ মুহূর্তই প্রমান করে যে মুসলমানরা এক কাতারের ভাই।
ভোজনবিলাস বাঙালিরা হরেকরকম খাবারের আয়োজন করে। চাকুরিজীবী ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষেরা সেইদিন স্থানীয় দর্শনীয় স্থানে ভ্রমন করে ঈদ আনন্দতে আরো এক নতুন মাত্রা যোগ করে। সারাদিন শেষে একটি উৎসবমুখর ব্যস্তময় দিনের পরিসমাপ্তি ঘটে।