Eid MubarakFestival

মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত

ঈদ মোবারক! ঈদ হলো মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য একটি খুশির দিন। ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে এই দিন সকল শ্রেণির মুসলমানগণ তাদের সর্বোচ্চ টা দিয়ে পরিবারের জন্য খুশির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এই দিন আত্মীয়-স্বজন, সব বয়সের বন্ধু-বান্ধব, অফিস কলিগ, ও ব্যক্তিজীবনে শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাদের পরস্পর কৌশল বিনিময় করে।

ক্যাম্পাস প্রতিদিন এর সকল পাঠক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের আয়োজন। আজকে আমরা আমাদের আয়োজনে মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত সম্পর্কে আলোচনা করবো।

মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ। বছরে দু’টি ঈদ উদযাপন করে মুমিন মুসলমানগন। ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। ঈদের নামাজ বছরে দুবার পড়ার কারণে অনেকেই নামাজ পড়ার নিয়ম ভুলে যান। সে কারণেই মুমিন মুসলমানের জন্য ঈদের নামাজের নিয়ম জেনে নেয়া জরুরি।

জেনে নিন: মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

মহিলাদের উপর ঈদের নামায ওয়াজিব নয়; বরং সুন্নত। মহিলারা মুসলমানদের সাথে ঈদগাহে ঈদের নামায আদায় করবেন। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে সেই নির্দেশ দিয়েছেন। তবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  নির্দেশ দিয়েছেন “ঋতুবতী নারীদেরকে নামাযের জায়গা থেকে দূরে থাকতে।”[সহিহ বুখারী (১/৯৩) ও সহিহ মুসলিম (৮৯০)]

মহিলাদের ঈদের নামাজের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন রয়েছে। চলুন ঈদের নামাজের নিয়ম জেনে নেইঃ
নিয়ম-১: প্রথমে সেই ঈদে নামাজ আদায় করবেন সেই ঈদের নামাজের নিয়ত করতে হবে।
নিয়ম-২: তাকবিরে তাহারিমা বা “আল্লাহু আকবার” বলে কাধ পর্যন্ত হাত তুলে বুকে হাত বাধতে হবে।
নিয়ম-৩: তারপর “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতামাপা যাদুকা ওয়া না হ গাইরুকা।” ছানা পড়তে হবে।নামায পড়ার সঠিক নিয়ম 1
নিয়ম-৪: ৩ বার “আল্লাহু আকবার” বলে তাকবির বলতে হবে।
নিয়ম-৫: তারপর প্রথম দুইবারে কাধ পর্যন্ত হাত তুলে ছেড়ে দিতে হবে এবং ৩য় যারে হাত বাধতে হবে। এবং প্রতি তাকবিরের পর ৩ বার “সুবাহানাল্লাহ” বলার সময় থামতে হবে।
নিয়ম-৬: তারপর সূরা ফাতিহার সাথে যেকোন একটি সূরা পড়তে হবে।
নিয়ম-৭: তারপর স্বাভাবিক নামাজের মতো করেই রুকু ও সিজদা করে।
নিয়ম-৮: দ্বিতীয় রাকাতের জন্য উঠে দাড়াতে হবে। তারপর আবার দ্বিতীয় রাকাতে জন্য সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে।
নিয়ম-৯: রুকুতে যাওয়ার পূর্বে ৩য় বার “আল্লাহু আকবার পড়ে ৩টি তাকবির সম্পন্ন করতে হবে। প্রতিটি তাকবিরের জন্য হাত ছেড়ে দিতে হবে এবং ৪র্থ তাকবিরে “আল্লাহু আকবার” বলে হাত না বেঁধে রুকু করতে হবে।
নিয়ম-১০: এবার সেজদা, তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে র নামাজ শেষ করতে হবে।
[বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ঈদের নামাজে ১ম রাকাতে সুরা আলা এবং ২য় রাকাতে সুরা গাশিয়াহ পাঠ করা সুন্নাত।] মহিলাদের ঘরে একা বা নিজের ঘরের মা বোনদের সাথে নিয়ে বা কয়েক বাড়ির মহিলাদের সাথে নিয়ে একসাথে ঈদের সালাত আদায় করাতে পারে। কারো বাড়িতে জামার করে সালাত আদায় করা বিদাত।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা দুই ঈদে একই নিয়মে নামাজ আদায় করা হয়।

মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত

ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে:

نَوَيْتُ أنْ أصَلِّي للهِ تَعَالىَ رَكْعَتَيْنِ صَلَاةِ الْعِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتِّ التَكْبِيْرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اِقْتَضَيْتُ بِهَذَا الْاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اللهُ اَكْبَرْ

উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকাআতাইন সালাতিল ইদিল ফিতরি মাআ সিত্তাতিত তাকবিরাতি ওয়াঝিবুল্লাহি তাআলা ইকতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াঝঝিহান ইলা ঝিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি ‘আল্লাহু আকবার।

অর্থ : আমি ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি- ‘আল্লাহু আকবার’।মহিলাদের কোরবানি ঈদের নামাজ প্রাকটিক্যাল ভিডিও সহ| Mohilader Eid Namaz |EidUl Adha|Eidul Fitr | - YouTube

ঈদুল আজহা নামাজের নিয়ত আরবিতে:

نويت ان اصلي لله تعالي ركعتي صلاة العيد الاضحى مع ستة تكبيرات واجب الله تعالى اقتديت بهذا الامام متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر

উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা আলা রাকয়াতাই ছালাতি ঈদিল আযহা মাআ ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা আলা ইক্বতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থ :  ‘নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা আলা রাকয়াতাই ছালাতি ঈদিল আযহা মাআ ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা আলা ইক্বতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।’

ঈদের নামাজের মুসলমান সকল পেশার মানুষ এক কাতারে নামাজ আদায় করে।  নামাজ শেষে তারা পরস্পর কৌশল বিনিময় করে। এসময় এক আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি করে। মুসলমানদের এ মুহূর্তই প্রমান করে যে মুসলমানরা এক কাতারের ভাই।

ভোজনবিলাস বাঙালিরা হরেকরকম খাবারের আয়োজন করে। চাকুরিজীবী ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষেরা সেইদিন স্থানীয় দর্শনীয় স্থানে ভ্রমন করে ঈদ আনন্দতে আরো এক নতুন মাত্রা যোগ করে। সারাদিন শেষে একটি উৎসবমুখর ব্যস্তময় দিনের পরিসমাপ্তি ঘটে।

Related Articles

Back to top button